বাংলাদেশে ই-কমার্স ব্যবসার সিনারিওতে যাদেরকে আপনি বড় এবং সফল বিজনেস ভাবছেন তাদের এক্স্যাক্ট কোন জিনিসটা দেখে সফলতা মাপছেন?

  • কয়েক মিলিয়ন ভিউ হওয়া শতশত এড?
  • মাসে কয়েক কোটি টাকার রেভিনিউ রিপোর্ট?
  • কিছু ক্ষেত্রে এস্থেটিক অফিস?

এই তো! ৯০%+ মানুষজন এগুলো দেখেই বিশাল কিছু ভেবে নিচ্ছেন। বাস্তবতা বড়ই কঠিন! এগুলো শুধু মোড়কের মত; তারাই সত্যিকারটা জানে যারা ইন্টার্নালি জড়িত। বাইরের কেউই আসল সত্যটা জানে না।

আমার পূরণো ফেবু বন্ধুদের স্মরণে থাকার কথা, আমার প্রথম eCommerce ব্যবসা শুরু ২০১৪ তে। তখন থেকে আমি কখনোই বিজনেসের রেভিনিউ নিয়ে কথা বলি না। কারণ, আমার কাছে হোয়াট একচুয়ালি ম্যাটারস ইজ নেট রেভিনিউ এবং প্রফিট মার্জিন লেভেল।

এদেশে এক মাসে ২৩ কোটি টাকা রেভিনিউ বের করা ই-কমার্সের নেট রেভিনিউ লাখের ঘরে। কি বুঝলেন? মাসে কয়েক কোটি টাকার এড রান করে (মিডিয়া বায়িং) কয়েক মিলিয়ন ভিউস এবং পাহাড়সম সেলস জেনারেট করার পিছনের অবস্থা এটা।

বিশাল অফিস দেখা যায় মালিকপক্ষের প্রোফাইলে, অথচ তাদের থেকে একেকজন ভেন্ডর ২০-৫০ লাখ টাকা পাওনা আছেন অনেকদিন ধরে। অভিযোগ করছেন আমার কাছে!

বাহ্যিকভাবে আপনি যাকে বিজনেস টাইকুন ভাবছেন, বাস্তবে ব্যাকএন্ডে তার দেউলিয়া হওয়ার অবস্থা প্রায়।

হ্যা, এরা একটা সময় পর্যন্ত সত্যিই ভালো কামিয়ে নিয়েছে। কিন্তু একটা নির্দিষ্ট টাইমলাইনের পর এদের ব্যবসা দুর্বল হয়ে দ্রুতই আইসিইউ-তে চলে যায়। তখন অনেক বেশি খরচ আর এফোর্ট ব্যয় করে ব্যবসাকে বাঁচানো লাগে।

সময়ের এক ফোড়, অসময়ের দশ ফোড় টাইপ ব্যাপার। এতদিন যা কামিয়েছে, তার বিশাল অংশ ব্যয় হয়ে যায় এখানে।

বিজনেস কনসালটেন্সির জন্য আমার অফিসে যারা এসেছেন, অনেককেই আমি এই কথাটা বলেছি –

“প্রতিদিন নতুন কিছু করা বিজনেস না। বিজনেস হলো একটা নিশে বিশ্বস্ত ব্রান্ড হওয়া।”

আজকে অমুক আইটেম চায়না থেকে এনে এড রান করে সেল করবো, দুই মাস পরে সেই আইটেমে আর লাভ না থাকলে আরেক নতুন আইটেম এনে আরও কয়েকদিন সেল করবো। এমনটা কারো কারো বিজনেস স্ট্রাটেজি, তবে আমার পছন্দ না মোটেও।

তবে হ্যা, দেশে এমন অনেক ফেসবুক পেইজ আছে যেটার এড দেখে আপনি ভাবছেন, এইগুলা কি আদৌ মানুষ কিনে! অথচ সে ক্যাশ কাউ মডেলে একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ভালো একটা এমাউন্ট মার্কেট থেকে বের করে নিচ্ছে এবং ধীরে ধীরে সাস্টেইনএবল ব্রান্ড স্ট্রাটেজিতে ট্রানজিশন করছে।

বিভিন্ন পডকাস্টে শেয়ার করা টিপিক্যাল রেজাল্ট কিংবা কেস স্টাডি দেখে বিভ্রান্ত হয় অনেকেই। আকাশ-কুসুম স্বপ্নে চাকরি ছেড়ে নেমে পরে ব্যবসা করতে! অথচ বাস্তবতার নানা মাপজোখ বুঝেশুনে শুরু করা লাগে।

৫০% মার্কেটিং করে আপনার প্রডাক্টস ইটসেলফ। বাকী ৫০% আঞ্জাম দেয় কন্টেন্ট এবং সেই কন্টেন্টের ডিস্ট্রিবিউশন। ইচ্ছেমতন প্রডাক্ট সিলেকশন, ক্যানভাসার টাইপ কন্টেন্ট, ডেইলি হাজার ডলার এডস্পেন্ড করলেই ব্যবসা হয়না।

একটা ব্যবসার নিশ সিলেক্ট করা থেকে শুরু করে অডিয়েন্স সেগ্মেন্টেশন, ওয়েবসাইট, কনটেন্ট প্লানিং-মেকিং, প্রকিউরমেন্ট, ইনভেন্টরি অপটিমাইজেশন, মার্কেটিং, সেলস টিম অপারেশন, অফলাইন ডিস্ট্রিবিউশন সহ সবকিছুতে আমরা হেল্প করতে পারি।

বিনিময়ে ১২ মাসের জন্য আমরা চার্জ করবো ১০ লাখ। নিয়মিত জানমাল খরচ করে এক্সপেরিমেন্ট আর পড়াশোনা করা কিছু লোক আপনার ব্যবসার কঠিন কাজগুলো আঞ্জাম দিবে।

এখন বলেন, সত্যিকার অর্থেই বিজনেসে সিরিয়াস কয়জন যোগাযোগ করবেন বিস্তারিত জানার জন্য?