একদিনের ঘটনা, রাকিব নামে একজন উদ্যমী তরুণ ঠিক করলো যে সে তার অনলাইন ব্যবসা আরও বড় করবে। অনেক চিন্তা-ভাবনা করে সে বুঝতে পারলো, সঠিকভাবে ট্রাফিক চ্যানেলগুলো ব্যবহার করলেই তার ওয়েবসাইটে গ্রাহক আসবে এবং ব্যবসা বৃদ্ধি পাবে।
রাকিবের প্রথম পদক্ষেপ ছিল অরগানিক সার্চ থেকে গ্রাহক আনা। সে তার ওয়েবসাইটের জন্য SEO ঠিকমত সেটআপ করলো, যাতে গুগলে খুঁজলেই মানুষ তার সাইট খুজে পায়। মানুষ গুগলে সার্চ করে তার পণ্য খুঁজে বের করে ওয়েবসাইটে আসতে লাগলো।
পরের ধাপে, সে দেখলো কিছু মানুষ সরাসরি তার ওয়েবসাইটের নাম ব্রাউজারে টাইপ করে আসে। এটাকে বলে ডিরেক্ট ট্রাফিক। মানুষ তার ব্র্যান্ড সম্পর্কে জানতে পেরে সরাসরি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে শুরু করলো।
কিছুদিন পর রাকিব দেখলো তার পণ্য সম্পর্কিত অনেক ব্লগ ও নিউজ সাইট তার সাইটের লিঙ্ক দিয়েছে রেফারেন্স হিসেবে। এটি হলো রেফারাল ট্রাফিক। অন্য সাইট থেকে মানুষ তার সাইটে এসে পণ্য কিনতে শুরু করলো। এটাকে আবার এস ই ও এর ভাষায় ব্যাকলিঙ্ক ও বলা হয়।
তারপর সে সোশ্যাল মিডিয়াতেও পোষ্ট দিতে শুরু করলো। সোশ্যাল মিডিয়া ট্রাফিক থেকে বেশ ভালো সাড়া পেলো। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, এবং টুইটার থেকে মানুষ তার ওয়েবসাইটে এসে পণ্য দেখতে শুরু করলো।
একদিন রাকিব ভাবলো, পেইড সার্চ বা PPC বিজ্ঞাপন দিলে কেমন হয়? সে গুগল অ্যাডসে কিছু বিজ্ঞাপন চালালো কমার্শিয়াল কিওয়ার্ড থেকে প্রফিটেবল কিওয়ার্ড খুজে বের করে। ফলাফল দারুণ! অনেক পটেনশিয়াল গ্রাহক গুগল বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে তার সাইটে আসতে লাগলো।
এবার সে ইমেইল মার্কেটিং শুরু করলো। যারা আগে তার সাইট ভিজিট করেছে বা যারা আগ্রহ দেখিয়েছে, তাদের জন্য সে ইমেইল পাঠানো শুরু করলো। এভাবে সে ইমেইল ট্রাফিক পেতে শুরু করলো। ইমেইল চেক করে অনেকেই তার নতুন পণ্য সম্পর্কে জানতে পারলো।
এরপর সে ভিডিও ট্রাফিক বাড়ানোর জন্য ইউটিউবে কিছু ভিডিও তৈরি করলো। ভিডিওগুলোতে তার পণ্যের বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে লিঙ্ক শেয়ার করলো। ইউটিউব থেকে মানুষ তার ওয়েবসাইটে আসা শুরু করলো।
এরই মধ্যে সে কিছু বিজ্ঞাপন দেখানো শুরু করলো বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ( উদাহরনঃ ন্যাটিভ এডস )। এভাবে ডিসপ্লে অ্যাডভার্টাইজিং ট্রাফিক থেকে সে অনেক ভিজিটর পেলো। সেই বিজ্ঞাপনগুলো বিভিন্ন ওয়েব পেজে প্লেসমেন্টে থাকায় মানুষ সেখানে ক্লিক করে তার সাইটে এলো।
রাকিব জানত, কেবল নতুন ভিজিটর আনলেই চলবে না, পুরানো গ্রাহকদেরও ফিরিয়ে আনতে হবে। এজন্য সে রিটার্গেটিং ট্রাফিক চালু করলো। যারা তার সাইটে একবার এসেছিল কিন্তু কেনাকাটা করেনি, তাদেরকে আবার বিজ্ঞাপন দেখানো হলো এবং তারা ফিরে এলো।
অবশেষে, রাকিব তার ওয়েবসাইটে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং চালু করলো। কিছু ব্লগার এবং ইনফ্লুয়েন্সার তার প্রোডাক্টের লিঙ্ক শেয়ার করে এবং প্রতি বিক্রির জন্য কমিশন পায়। এভাবে অ্যাফিলিয়েট ট্রাফিক থেকেও সে ভালো পরিমাণে ভিজিটর পেলো।
এইসব চ্যানেলগুলোকে সঠিকভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে রাকিব তার অনলাইন ব্যবসাকে সফলতার পথে নিয়ে যেতে সক্ষম হলো।
আপনিও চাইলে রাকিবের মত ঠিক এভাবে সঠিক প্ল্যানিং এর মাধ্যমে আপনার ব্যবসার বৃদ্ধি করতে পারেন। অবশ্য তার জন্য আপনার একজন অভিজ্ঞ বিজনেস এবং মার্কেটিং কনসাল্টেন্টের প্রয়োজন হবে। যে আপনার ব্যবসা কেন্দ্রিক চিন্তা ভাবনা করতে পারবে এবং সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতেও পারবে।